বিজ্ঞাপন দিন

যেমন হওয়া উচিত আমাদের সহপাঠী | মুহা. আসাদুল্লাহ



জীবনের রঙ্গমঞ্চে ছাত্র জীবন এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ছাত্রজীবন একজন মানুষের ভবিষ্যৎ সফলতা ও অসফলতা নির্ধারণ করে দেয়। ছাত্রজীবনে যে যত বেশী আত্মপ্রত্যয়ী, পরিশ্রমী, অধ্যাবসায়ী, নিয়মানুবর্তী তার ভবিষ্যৎ তত উজ্জ্বল, তত সম্ভাবনাময়; অপরদিকে যে এর বিপরীত, সে ব্যর্থতার আস্তাকুঁড়ে পর্যবসিত হয়।


ছাত্রজীবনে একজন ছাত্রের অনেক প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ রয়েছে, যেগুলো তার ছাত্রত্বের মূল নিয়ামক ও সহায়ক। উস্তাদ, দৈনন্দিন দরস, কিতাব, খাতা, কলম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গের পাশাপাশি সহপাঠীও শিক্ষা জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ; যা নিবার্চন করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিভ্রান্তির শিকার হয়।


একজন সৎ, সাহসী, স্বপ্নচারী এবং প্রকৃত জ্ঞানপিয়াসী সহপাঠী পারে একজন অসৎ দুর্বল, লক্ষহীন এবং সীমাহীন হতাশায় মূহ্যমান শিক্ষার্থীকে আলোর পথে নিয়ে আসতে অনুপ্রেরণার আলোয় আলোকিত করতে, তার চিন্তা-চেতনা এবং বোধ-বুদ্ধিকে শুদ্ধতার রঙে রাঙিয়ে দিতে।


বর্তমান সময়ের জ্ঞানতাপস, লদ্ধ প্রতিষ্ঠ্য লেখক, বিপ্লবী সংস্কারক, তালিবে ইলমের ‘দরদী মালী’ মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ (হাফি.) অসৎ সহপাঠীর কুফল বোঝাতে ছাত্রদেরকে বাগানের ফুলের সাথে তুলনা করে বলেন, ‘দীর্ঘ এ জীবনের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো, এমন কিছু ফুল বাগানে থাকে, যেগুলোর কারণে অন্য অনেক ফুল অকালে ঝরে যায়, অসময়ে গাছে থাকতেই মরে যায়। আদতে এগুলো ফুল নয়, ফুলরূপী বিষপোকা। যুগের একজন জ্ঞানবৃদ্ধ তাঁর জীবন দর্পনে অসৎ সহপাঠীকে বিষপোকার উপমায় দাঁড় করিয়ে যে অপার বাস্তবতা তুলে ধরেছেন, তা সর্বব্যাপি এবং চিরন্তন।


নেতিবাচক চিন্তাধারার একজন সহপাঠীর সংশ্রবে ইতিবাচক চিন্তাধারার অসংখ্য শিক্ষার্থী হারিয়ে যাচ্ছে বিক্ষিপ্ততা এবং নিয়ন্ত্রনহীনতার অতল গহ্বরে। এমন ঘটনা শিক্ষাঙ্গন পর্যায়ে হর-হামেশায় ঘটে, ঘটছে।


বন্ধু মহামারীর এ যুগে চরিত্রহীন বন্ধুর পাল্লায় পরে অনেক মায়ের স্বপ্নের সন্তান পরিণত হয়েছে কালের শিক্ষিত চোরে অথবা আবিভর্ভূত হয়েছে পরিবার ও সমাজের কলঙ্ক এবং সময়ের ত্রাস হিসাবে। সহপাঠী নামী বিষপোকার কল্যাণে পথ হারানো, লক্ষ্যচ্যুত অসংখ্য প্রতিভাবান, সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থী নিজেই নিজের জীবননাশের কারণ হয়েছে।


এ ভয়ংকর ব্যাপারটা ফুটে উঠেছে বাংলাভাষার সর্বপরিচিত একটি বচনে-

সৎ সঙ্গ স্বর্গবাস,

অসৎ সঙ্গ সর্বনাশ


তাই অসৎ সঙ্গের এই সর্বনাশা থেকে বাঁচতে সহপাঠী নির্বাচনে হতে হবে সতর্ক, সজাগ এবং সংযত। যার চিন্তা-চেতনা আমার চিন্তা-চেতনার সাথে মিল থাকবে, শুধু এমন সহপাঠীর সাথেই থাকতে হবে আমার সার্বক্ষণিক উঠা-বসা। যে সহপাঠী যুগের প্রয়োজনের আলোকে নিজের কর্মপহ্না নির্ধারণ করে, স্বপ্ন দেখে একটি সুন্দর সমাজ বিনিমার্ণের, সর্বোপরি যে চায় কালের কান্ডারী হিসেবে সর্বদা পৃথিবীর সেবায় নিয়োজিত থাকতে, দিকভ্রান্ত উম্মতের খেদমতে নিজেকে উৎসর্গ করতে।


মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

নবীনতর পূর্বতন