১.
রাত্তিরে আমার ঘুম ধরে না। জানালার ছিদ্র পথে লুকোচুরি করে কুয়াশা। ল্যাম্পপোস্টের ম্লান হয়ে যাওয়া আলো দেখে ওঠি। ওদিকে আকাশে ভেসে ওঠা নক্ষত্রের গতি, আমার কাছে ফেরেশতা বলে ভ্রম হতে থাকে। এখানে হেফজ খানা নেই। এখানে নানু বাড়ির মেঠোপথ নেই। এখানে আম্মার যত্নে গড়া শীতের রাতগুলো নেই।
বিষাদ-আমারে জড়িয়ে ধরে রাইখো না।
মনস্তাপ-আমারে হারায়ে দিয়ো না।
আক্ষেপ আমারে নিরাশ করো না।
তোমরা জেনে রাখো হে শূন্যলোকের গ্রহরা, আমাকে একজন মনে রাখে। আমাকে একজন অবলোকন করে। আমাকে একজন কয়েক হাজার কোটি বছর ধরে চেনে।
আমি প্রতিদিন শেষরাতে মেঘের ওপর থেকে কারও ডাক শুনি। তোমরা জেনে রাখো, এই খাল-বিল আর মা-বাবারা শুধু তাঁর ভালোবাসার ওসিলা। আমি তাঁর ভালোবাসার কাঙাল। আমি তার আলোর আলেয়া। আমি তাঁর সৃষ্টির কলঙ্ক। রোজ সকালের সূর্যের দ্যুতির মতন আলো ছড়ায়ে যায় যে মহমান্বিত; আমার অন্দরে দাও জ্যোতি, নূর।
আমারে আলো দাও হে মহীয়ান, আমারে সম্পাদনা করো হে রহমান।
২.
রুক্ষ চারপাশ। খাড়া খাড়া উনপঞ্চাশ তলা বিল্ডিং। আমার আর আসমান দেখা হয় না। পিরামিডের মতন-চাঁদ আমার কাছে আজনবি ঠেকে। কাঠালপাতার গন্ধ নেই এই চৌকাঠে। ঘরে-বাইরে-শুধু রাজনৈতিক গালগল্প। শুধু মোদীর আগ্রাসন। গাজা স্ট্রিপের দুঃখভরা রাত্রি।
দৈনন্দিন জীবনের ডায়েরিতে এখন কতগুলো কালো দাগ দেখা যাইতেছে। এখন জীবনের রসগুলো সব শুষে নিতেছে ঐক্যের ভাঙন। হাঙরের মতো হা হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায় দূরে-অন্ধকার ভবিষ্যতকে। নতুন ডাক আর আসবে কবে বলো, মাটি! বলো মা!
ডাক আসেনি। ডাক আসবে না। চিন্তাকে আগে ধুয়ে নেও হে ভুলেরা। ঈশ্বরকে চেন। আলোকে বোঝো।
সিরিয়ায় টেলিফোন করো। জিগাও, মুক্তি কই?
এমন সান্ধ্য হাহাকার করতে করতে দিনে দিনে ক্ষয় যাইতেছি। ক্ষয় যাইতেছে আমার মরণ। কাছে আসতেছে কবর-মাটির সোঁদা গন্ধ।
ফজরের নামাজ, আমারে তুমি ডেকে দিয়ো কোনো বিপ্লবোত্তর সুবহে সাদিকে—
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মন্তব্য লিখুন