২০. ১১. ২৪ ।। বুধবার
দিনগুলো কীভাবে চলে যাচ্ছে, অবলীলায়। আজকে মনে হয় বুধবার। তিন দিন হয়ে গেছে। অথচ এখনও পাঠের ঝুলি সম্পূর্ণ ফাঁকা। বাড়িতে আসার আগে একটা প্রবল পাঠ তৃষ্ণা থাকে এবার অনেক বই পড়ব। কিন্তু দিনদিন এটা কীভাবে যেন মরে যায়, অজান্তেই মিইয়ে আসে।
এটা কখনো উচিত না; অন্ততপক্ষে একজন স্বপ্নবাজ তরুণের জন্য। স্বপ্নচারী মানুষেরা কখনো কালক্ষয় করে না; তারা কাজ করে খুবই দ্রুততা এবং শৃঙ্খলার সাথে। আলস্য, অবহেলাগুলো সফলতার অন্তরায়, লক্ষ্যে পৌঁছার পথের কাঁটা। এটা বুঝেও কেন যে মানি না, আল্লাহ মালুম। বোধ করি এখানেই একজন সফল ও অসফল ব্যক্তির পার্থক্যটা তৈরি হয়।
***
আমাদের জীবনের বিকেলগুলো সত্যি অসাধারণ, মোহময়, নিটোল। ছুটির প্রতিটা বিকেলেই তাই আমি খুব করে অনুভব করতে চাই; গোধূলির আলোছায়ায় আমি ঘোরগ্রস্তের মতন হাঁটি, সুপ্রচুর কৌতূহল নিয়ে আনমনে তাকিয়ে থাকি সুদূর কোথাও। আসমানে অথবা তার দিগন্ত রেখায়, সটান দাঁড়িয়ে থাকা রেন্ট্রি গাছগুলোতে, এঁকেবেঁকে চলে যাওয়া রেললাইনে এবং মুগ্ধ হয়ে ভাবি সৃষ্টির রহস্য ও নিগূঢ়তা।
এসবের ভেতর হুটহাট ভেসে উঠতে থাকে মায়া, স্মৃতি, ভালোবাসা, দুঃখ -আমি কাঁপতে থাকি কোনো এক অজানার জন্য ; এসব গভীর অরণ্যের মতন অনুভূতিতে নিজেকে টের পাই বড় অদ্ভুতভাবে, আমাতে ছেয়ে যায় দুঃখ রাঙা রাতের মত অতীত
***
সন্ধ্যা হলে ভদ্র ছেলেটির মতন বই হাতে নিয়ে বসে পড়ি। পড়ছি সাবের চৌধুরীর ‘কোথাও কেউ নেই।’ গদ্য প্রধান বই। গদ্য আমার একেবারেই ভালো লাগা ও পছন্দের বিষয়, তার সাথে যদি যোগ হয় স্মৃতি এবং জীবনবোধ। তাহলে যে বিপুল আনন্দটার সৃষ্টি হয়, এই আনন্দকে আমি কখনো শব্দে ব্যক্ত করতে পারব না। চৌধুরী সাহেবের মচমচে, নির্মল, স্বাদু গদ্য আমাকে খাওয়া ভুলিয়ে দিয়েছে, ভুলিয়ে দিয়েছে ঘুমকেও। ফলে টানা কয়েকঘন্টা বুঁদ ছিলাম এই সুন্দর বইটিতে।
এরপর খাওয়া, ঘুম।
আমাদের জীবনগুলো কত সুন্দর!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মন্তব্য লিখুন