যয়তুন জান্নাত
আকাশের মেঘ খন্ডগুলো কাছাকাছি হয়েছে। মেঘের গা কালো বর্ণের অবয়ব ধারণ করেছে। রুক্ষ ভগ্ন জমিনের পিঠের উপর কালো মেঘ। ঝাঁ ঝাঁ রোদের দুপুরে প্রকৃতির মুখে আবরণ পড়েছে। বৃষ্টি বর্ষণের পূর্বাভাসে জমিনের ভগ্ন পিঠে প্রাণ সঞ্চালন করেছে। বর্ষণের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত রুগ্ন মাটির কাঁধে ক্লেশ-ভারে পতিত এক শিশু এক ছাঁট বৃষ্টির আকাঙ্ক্ষায় ন্যূব্জ। মায়ের ভুখা মুখে দুঃখ, তাঁর কোলের শিশুটি ক্ষুধার মুখে পড়ে আছে। ক্ষুধার সাথে পানির পিয়াস প্রাণ নাশ করে দিতে চাচ্ছে।
বৃষ্টির পানি যেন প্রাণ ফিরে যাওয়ার ন্যুন উপকরণ যুগিয়েছে। ফোঁট ফোঁটা মেঘ, গলে পড়ছে। বৃষ্টি হয়ে ঝরছে, আল্লাহর রহম, যেখানে মরণরে বারণ করার পরান নাই। বরং বরণ করার জন্য নিষ্পাপ শিশু ও মানবতার মায়ের অখন্ড অবয়ব রয়েছে। সেখানে মায়ের কোল শূন্য হচ্ছে, শিশুর মৃদু হস্ত রক্তাক্ত মায়ের মুখে ঝিমুচ্ছে।
সজীবতাপূর্ণ একটি জনপদ। জনপদটির মুখে জয়তুন গাছের জান্নাত (বাগান)। রহমতের আদুরে পরশে সৌন্দর্যে ভরে গেছে জান্নাতটি। অল্প বয়স্ক অনেক বালক বালিকা জয়তুন জান্নাতে ছোটাছুটি করছে। মিষ্টি কল্লোলে চেঁচামেচি করছে। ছোট্ট পায়ে কন্যা শিশুগুলো খুব ছোট নুপুর পরেছে। জান্নাতটি নিনাদহীনা। কল্পনাপ্রসূত। কল্পনাতীত ক্ষুদ্র কল্পনা এগুলো। ধরার বক্ষে জান্নাত! জান্নাত কি ধারায় সাজে! না, ধরায় কোনো জান্নাত নেই। জান্নাত থাকে অধরায়। এই জয়তুন জান্নাত, মোহ মায়া-ময় হাসিস্বর, ছোট্ট নুপুরের ঝুনঝুন, এ সবই অধরায়। এই ক্ষুদ্র পৃথিবীতে, এ ধরার মাটির ভেতর শুয়ে আছে এই শিশুগুলো
যে শিশুরা অধরার বুক চিরে সুন্দর সম্মোহন তৈরি করছে, জান্নাতে পাখি হয়ে কিচিরমিচির করছে।
কোন মন্তব্য নেই