কাকডাকা ভোর
পাখিদের কিচিরমিচির গুঞ্জরণে ঘুম ভাঙ্গে অতি প্রত্যুষে। দক্ষিণের জানালা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে গা জুড়িয়ে যাওয়া ছমছমে মৃদুমন্দ ঝিরঝির হাওয়া। মুক্ত আকাশের উদার বক্ষে ডানা মেলে নির্বিঘ্নে উড়ে বেড়ায় ঝাঁক ঝাঁক পাখিরা।
সূর্যের রক্তিমতায় অদূর দীঘিনালার টইটম্বুর জলরেখাগুলো চূর্ণ হীরক খন্ডের ন্যায় চিকমিকিয়ে উঠছে বারবার। নালার পাশের সদ্য সফেদ কাশফুলের স্নিগ্ধতা হৃদয়ের অলিন্দে ছড়িয়ে দিচ্ছে শুভ্র-সাদা অনুভব।
কাকডাকা ভোরে কোকিলের কুহুতানে নিজের ভেতর এক অদ্ভুত পুলক অনুভূত হয়। বাঁকা উঠোনের কোণে নিথর দাঁড়িয়ে থাকা দীর্ঘকায় আকাশী পল্লবের ফাঁকফোঁকর দিয়ে তাকালে সূর্যিমামাকে দারুন লাগে – যেন উন্মোষিত যৌবনা গৌরকান্তি নববধূ। থেমে থেমে কাকের কা-কা ডাকে বিরক্তি এসে যায় একদম।
বিশাল আসমানটাকে মরুভূমির প্রতিচ্ছবি বলে ভ্রম হয়। গগনপটে টকটকে রক্তজবা মনে হয়, দূরের সেই সূর্যটাকে। বসন্ত প্রকৃতির এই মনোহর রূপ ব্যাথিত হৃদয়েও যেন আনন্দের হিল্লোল বইয়ে দেয়।
প্রভাত রবির এই চিত্তাকর্ষক স্নিগ্ধময় প্রকৃতি আমাকে তন্ময় করে রাখে সারাক্ষণ। সাতসকালের এই অনিন্দ্য সুন্দর পরিবেশ আমাকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে পুরো দিনমান।
কোন মন্তব্য নেই