সভ্যতার সবচেয়ে দুঃসময়ে আমরা বসবাস করছি এখন। বর্তমান পৃথিবীটা সততা ও ন্যায় বিবর্জিত আচরণে উন্নতি ও উৎকর্ষের আধিক্যে পরিশীলিত। মানুষ ও মানবতা নিজেদের স্বরূপ ভুলে গিয়ে শয়তানি দৌরাত্ম্যে অপদস্থহচ্ছে এবং তাকেই অনুসরণীয় বানিয়ে নিশ্চিন্তে, নিঃসংশয়ে তারই পূজা-অর্চনা করে যাচ্ছে। বিবেক, বুদ্ধি, বোধ যেন নাপাক ও পঙ্কিল সুরা দিয়ে প্রক্ষালিত।
মানবজীবনে নেই আপন পালনকর্তার প্রতি আনুগত্য ও বশবর্তিতার কোনো সভ্য উদাহরণ। আচরণে অনাচার, ব্যবহারে কুপ্রভাব, কর্মে ও ধর্মে নিজের মনের মতো অপমিশ্রণ প্রয়োগ করা হচ্ছে নির্দ্বিধায়। মহান আল্লাহ তা’আলার মনোনীত ধর্ম- ইসলাম এবং তাঁর সর্বশেষ দূত- মানব শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ববান রসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিবৃত জীবনাদর্শ উপেক্ষা করা মানব প্রকৃতির কোনো স্বাভাবিক বিষয় আদৌ ছিল না। অথচ মুসলিমদের পক্ষ থেকেই আজ ইসলাম কত উপেক্ষিত!
এখন আর মুসলিমদের আচার-ব্যবহার লক্ষ্য করে কোনো অমুসলিম ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয় না। উক্ত ধর্মের স্বরূপ যখন বিধর্মী কাফিরদের কাছে ফুটে ওঠে, তখন এই ধর্মের প্রতি বিমুগ্ধতাই তাকে ইসলামে আবদ্ধ হতে বাধ্য করে।
পৃথিবীর বুকে এই ধর্ম ও জীবনাদর্শ নিয়ে এসেছিল সভ্যতার সোনার মুকুট। যে মুকুট পরে সভ্যতা নব্য প্রতীক রূপে ধরাকে আলোকিত করেছিল। ধরার বক্ষে থাকা সমস্ত পাপাচার ধুয়ে-মুছে পৃথিবীকে দিয়েছিল অনন্য এক শোভা। পৃথিবী যখন দেখেছিল সভ্যতার এক অভূতপূর্বউপাখ্যান। যে বিশ্বজুড়ে ছিল ন্যায় নিষ্ঠা, হৃদ্যতা, ভালোবাসা, একাত্মতা এবং পঙ্কিলতামুক্ত এক নয়া নতুন সভ্যতা।
কিন্তু আজ, পৃথিবী অন্যত্বের কত শত রূপচর্চায় ব্যতিব্যস্ত। তার জবানে এখন উৎকীর্ণ ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা শোনা যায় না। কদিন আগের কথা- আমাদের দেশের ‘নারী সংস্কার কমিশনার’যে লজ্জাজনক কর্মের সাক্ষ্য রাখে, তা মুখে আনাই তো বিব্রতকর। গণিকাবৃত্তি বা অবৈধ যৌনকর্মকে এই কমিশনার সরবে স্বীকৃতি প্রদান করে। তার বক্তব্য ছিল: যে নারী বেশ্যাবৃত্তি করে, তাকে ‘বেশ্যা’ না বলে ‘নারী কর্মী’ বলা সমুচিত। (তবুও সে কর্মে রত থাকুক!) দ্বীনে ইসলাম তো এ কর্মকে ঘেন্না করে থাকে কেয়ামত তক; মানে তারা বলতে চাচ্ছে- ধর্মের ‘অনুপ্রবেশ’ সর্ব কর্মেই নিষিদ্ধ! কর্ম যত মন্দ ও নিন্দনীয় হোক, ধর্ম তার মাঝে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না!
অন্যদিকে, মুসলিম দেশগুলো আজ নিপীড়নের মুখে। অপমান, লজ্জা আর জুলুম-অত্যাচারে ভাগ্যের নির্মম পরিণতি ভোগ করে তাদের জীবন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া, কাশ্মীর, আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্র ভারত আমাদের চোখের তারায় সদা ভাসমান।
আদতে পৃথিবী আজ মূক, অন্ধ, বধির।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মন্তব্য লিখুন